তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি::
রাজশাহীর তানোরে ছেলে ধরা সন্দেহে দুই যুবককে গণপিটুনি দিয়েছে এলাকাবাসী। শনিবার বিকেলে পর্যায়ক্রমে উপজেলার কলমা ইউনিয়নের বহাড়া ও কামারগাঁ ইউনিয়নের কচুয়া এলাকায় বিচ্ছিন্ন এ দুই ঘটনা ঘটে।
বিচ্ছিন্ন দুইস্থানে ছেলেধরা সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন অজ্ঞাত এক যুবক ও এক চোরকে পিটুনি দিয়েছে স্থানীয় জনতা। রবিবার (২১ জুলাই) তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
লাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুরে উপজেলার কলমা ইউনিয়নের বহাড়া গ্রামে সন্দেহজনকভাবে অজ্ঞাত এক যুবক লুৎফর (২৯) নামে ঘোরাঘুরি করছিল। এ সময় ওই যুবকের অসংলগ্ন কথাবার্তা বলায় স্থানীয়দের ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দিয়ে ক্লাব ঘরে বেঁধে রাখে। পরে র্যাব-৫ এ খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে র্যাব-৫ এর রাজশাহীর মোল্লাপাড়া ক্যাম্পের একটি দল উদ্ধার করে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঐ যুবককে তানোর থানায় নিয়ে আসে।
জানা যায়, আটক লুৎফর মানসিক ভারসাম্যহীন, তবে শিক্ষিত। তার নাম লুৎফর আর বাড়ি সাতিপাটি শুধু এটুকু বললেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঐ যুবকের পুরো পরিচয় উদ্ধার করতে পারেনি র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা।
এদিকে বিকেলে কামারগাঁ ইউনিয়নের কচুয়া এলাকায় মনোয়ারুল (৩০) নামে এক ব্যক্তি স্থানীয় একজনের বাড়িতে গোপনে প্রবেশ করে। এসময় ওই বাড়িতে একাধিক শিশু বাচ্চা ছিলো। হঠাৎ বাড়ির ভিতরে অপরিচিত ওই ব্যক্তিকে দেখে সকলের সন্দেহ হয়। বাড়িতে প্রবেশের কারণ জিজ্ঞেস করলে সে কোন সদুত্তর দিতে পারেনি। এসময় এলাকাবাসী জড়ো হয়ে তাকে গণপিটুনি দেয়া শুরু করে।
আরও পড়ুন : প্রতিবন্ধী নারী ছেলে ধরা সন্দেহে গণপিটুনির শিকার
খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য বকুল হোসেনসহ কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে জনতার রোষানল থেকে তাকে উদ্ধার করে তানোর থানায় নিয়ে আসে।
আটক মনোয়ারুলের বাড়ি মোহনপুর উপজেলার টাঙ্গাইন কামারপাড়া গ্রামে। বাড়ির জিনিসপত্র চুরির উদ্দেশ্যে ওই বাড়িতে প্রবেশ করে বলে জানায় সে। মনোয়ারুলকেও তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হক মৃধা।
তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন লুৎফর কীভাবে, কী উদ্দেশ্যে নিয়ে তানোরের বহড়ায় গ্রামে এসেছে- তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাছাড়া নাম জানতে পারলেও তার ঠিকানা জানাতে পারেনি সে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আর কচুয়া থেকে আটক মনোয়ারুল নামের অপর ওই ব্যক্তি চিহ্নিত চোর। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় চুরির মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে দেশব্যাপী যে ছেলেধরার গুজব ছড়িয়ে পড়েছে- তাতে কান না দিয়ে এবং আতঙ্কিত না হওয়ার জন্যও সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
[…] […]