:: আর্ন্তজাতিক ডেস্ক ::
রেড রোডের উপর দিয়ে হেঁটে বেড়চ্ছেন এক অর্ধনগ্ন যুবতী! পরনে নীল জিনসের ট্রাউজার। উর্ধাঙ্গে কিছু নেই। পথ চলতি বাইক আরোহী থেকে শুরু করে গাড়ির চালকদের কাছ থেকে প্রথমে এ রকমই খবর পান কলকাতা পুলিশের আধিকারিকরা। প্রথমে খবর পেয়েছিলেন, ফোর্ট উইলিয়ামের সাউথ গেটের কাছে দেখা গিয়েছে। কিন্তু সেখানে তাঁকে পাওয়া গেল না। শেষে অনেক খোঁজাখুঁজির পর সেই তরুণীর হদিশ মিলল মেয়ো রোড এবং রেড রোডের সংযোগস্থলে পুলিশ মেমোরিয়াল স্ট্যাচুর কাছে।
কিন্তু সেই যুবতীকে উদ্ধার করতে গলদঘর্ম হল পুলিশ। বহু কষ্টে কলকাতা পুলিশের টহলদার শক্তি বাহিনীর মহিলা সদস্যরা কোনও মতে তাঁকে গাড়িতে তোলেন। নিয়ে যাওয়া হয় ময়দান থানায়। সেখান থেকে খবর দেওয়া হয় যুবতীর বাড়িতে।
কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাত ১১ টা নাগাদ প্রথম তাঁরা খবর পান ওই তরুণীর ব্যাপারে। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, যাঁরা খবর দিয়েছিলেন তাঁরা নিশ্চিত ছিলেন যে ওই তরুণী ভবঘুরে নন। তাঁর পোশাক দেখে কখনই ভবঘুরে মনে হয়নি। রেড রোড ধরে তল্লাশি চালাতে চালাতে ফের খবর আসে পুলিশের কাছে।
খিদিরপুর থেকে রাজাবাজারে বাড়ি ফিরছিলেন বাইক আরোহী দুলারে আলম। তিনি মেয়ো রোডে দেখতে পান ওই যুবতীকে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় টহলদারি পুলিশকে জানান। কিন্তু পুলিশ গিয়ে প্রথমে খুঁজে পায়নি। শেষে ওই যুবক এবং পুলিশ মিলে পুলিশ মেমোরিয়াল স্ট্যাচুর কাছে তরুণীকে খুঁজে পায়।
কিন্তু খুঁজে পেলে কি হবে? তাঁকে বাগে আনতে হিমশিম খান পুলিশ আধিকারিকরা। উর্ধাঙ্গ অনাবৃত থাকায় তাঁকে জামা দেওয়ার চেষ্টা করেন মহিলা পুলিশ কর্মীরা। কিন্তু সেই যুবতী অসংলগ্ন আচরণ করতে থাকেন। পুলিশ কর্মীরা জোর করে জামা পরাতে গেলে রীতিমত মারমুখী হয়ে ওঠেন ওই যুবতী। গালিগালাজ করতে থাকেন পুলিশ কর্মীদের। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছিল মত্ত অবস্থায় ছিলেন ওই যুবতী। শেষে অনেক কষ্টে তাঁকে ময়দান থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
ইতিমধ্যে পুলিশের কাছে হাজির হয় দুই যুবক। তাঁদের একজন বোনের খোঁজ করছিলেন। শেষে ওই দুই যুবকের এক জন ওই যুবতীকে নিজের বোন বলে চিহ্নিত করেন। জানা যায়, ভবানীপুর এলাকার ওই তরুণী কলেজে দ্বিতীয় বর্ষ পর্যন্ত পড়েছেন। মা-দাদার কাছে থাকেন।
মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত ওই যুবতী বাড়ি না ফেরায় খোঁজ শুরু করেন পরিবারের সদস্যরা। তখন জানতে পারেন পাড়ারই এক যুবকের সঙ্গে বিকেলে দেখা গিয়েছে ওই যুবতীকে। সেই যুবককে প্রশ্ন করে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন, ওই যুবতীকে নিয়ে ময়দানে রাত পর্যন্ত মদ্যপান করেন ওই যুবক। তারপর তরুণী বেসামাল হয়ে যাওয়ায় তাঁকে ফেলেই বাড়ি চলে যান তিনি। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘মেয়েটির মানসিক কোনও সমস্যা আছে কি না, তাও দেখা হবে।”
[…] […]