:: আন্তর্জাতিক ডেস্ক ::
দু’জন আক্রান্ত আইসোলেশনে ১৪৬ জন
চীনের উত্তরাঞ্চলীয় একটি শহরে প্রাণঘাতী বিউবোনিক প্লেগ ছড়াতে শুরু করায় জরুরি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। স্বায়ত্তশাসিত ইনার মঙ্গোলিয়া অঞ্চলের বায়ানুর শহরে প্লেগ প্রতিরোধে তৃতীয় মাত্রার সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
জানিয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম পিপলস ডেইলি।
গত শনিবার বায়ানুরের একটি হাসপাতালে বিউবোনিক প্লেগ রোগী শনাক্তের পরপরই এ সিদ্ধান্ত নেয় চীন সরকার। চলতি বছরের শেষ নাগাদ এ সতর্কতা থাকবে বলে রোববার জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। খবর সিএনএন ও বিবিসির।
বায়ানুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ‘বর্তমানে এ শহরের মানুষের মধ্যে প্লেগ মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে সবার আত্মসুরক্ষা ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে এবং সতর্ক হতে হবে।
শরীরে যে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক উপসর্গ দেখা গেলে তা সঙ্গে সঙ্গে কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।’ গত ১ জুলাই চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা শিনহুয়া জানিয়েছিল, দেশটির পশ্চিম মঙ্গোলিয়ার খোভদ প্রদেশে দুই ভাই বিউবোনিক প্লেগে আক্রান্ত হয়েছেন।
ল্যাব টেস্টে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। আক্রান্তদের একজনের বয়স ২৭ বছর, অন্যজনের ১৭ বছর। তাদের দু’জনকে আলাদা হাসপাতালে চিকিৎসা চালানো হচ্ছে। প্লেগে আক্রান্ত ওই দুই ভাই মারমোটের (ইঁদুরজাতীয় প্রাণী) মাংস খেয়েছিলেন।
এ কারণে মানুষজনকে এ প্রাণী শিকার থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা ১৪৬ জনকে চিহ্নিত করে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।
প্লেগের তিনটি ধরনের একটি হল বিউবোনিক প্লেগ। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বন্য ইঁদুর এবং ইঁদুরজাতীয় প্রাণীর শরীরে এক ধরনের পোকা জন্মায়। সেই পোকার মাধ্যমেই বিউবোনিক প্লেগের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত হয়।
দ্রুত এই ব্যাকটেরিয়া একজনের শরীর থেকে অন্যের শরীরে ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে বলে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন বলছে, উপযুক্ত চিকিৎসা না পেলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অসুখটি প্রাপ্তবয়স্ক একজন রোগীকে মেরে ফেলতে পারে।
বিউবোনিক প্লেগের সবচেয়ে সুপরিচিত লক্ষণ হল এক বা একাধিক সংক্রমিত, স্ফীত ও ব্যথাযুক্ত লসিকা গ্রন্থি যা বিউবো নামে পরিচিত।
শীত শীত অনুভূতি, অসুস্থতাবোধ, উচ্চমাত্রায় জ্বর, মাংসপেশি সংকোচন, খিঁচুনি মসৃণ, স্ফীত, ব্যথাযুক্ত লসিকা গ্রন্থি বা বিউবো যা কুঁচকিতে বেশি দেখা যায়। বগল বা ঘাড়েও থাকতে পারে। আক্রান্ত লসিকা গ্রন্থি ফুলে যাওয়ার আগেই ব্যথা হতে পারে।
হাত ও পায়ের আঙুল, ঠোঁট ও নাকের অগ্রভাগের টিস্যুতে গ্যাংগ্রিন হয়। অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে রয়েছে গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস, অনবরত রক্তবমি (হিমাটেমেসিস), হাত-পা ব্যথা হওয়া, কাশি ও রোগী জীবিত থাকা অবস্থাতেও ত্বকের ক্ষয় বা পচনে সৃষ্ট তীব্র ব্যথা।
এছাড়া প্রচণ্ড ক্লান্তি, পেটের সমস্যা, প্রলাপ বকা ও গাঢ় নিদ্রা বা অচেতন অবস্থা। মৃতদেহের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে এ রোগ।
চতুর্দশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্বে বিউবোনিক প্লেগের মহামারী দেখা দিয়েছিল। এ মহামারীর নাম দেয়া হয়েছিল ব্ল্যাক ডেথ। এটি প্রাণ কেড়েছিল অসংখ্য মানুষের।
[…] রিজেন্টের দুই হাসপাতাল সিলগালা চীনে এবার প্লেগ মহামারীর সতর্কতা যুক্তরাষ্ট্রে একদিনেই করোনা […]