বি.কে বিচিত্র, চট্টগ্রাম।
দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকা শিক্ষিকার পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, লোহাগাড়া প্রাথমিক শিক্ষা পরিবার। অসুস্থ শিক্ষিকা লোহাগাড়া উপজেলার উত্তর পদুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জনাব হোসনে আরা।
তিনি দীর্ঘদিন ধরে দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত। এখন নিয়মিত চিকিৎসা চলছে, কিন্তু অনেক অর্থের প্রয়োজন রয়েছে। শিক্ষিকা দুরারোগ্য ব্যাধি কথা গোপন রাখলেও, প্রাথমিক শিক্ষা পরিবার নিজ উদ্যোগে যোগাযোগ করে কিছু আর্থিক সাহায্যের ব্যবস্থা করে। ১৫ই সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার, শিক্ষিকার বাড়িতে গিয়ে খোঁজ খবর নেন, প্রাথমিক শিক্ষা পরিবার।
এব্যাপারে জানতে চাইলে, সহকারী শিক্ষা অফিসার, ওমর ফারুক, বলেন, সহকারী শিক্ষিকা, জনাব হোসনে আরার ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার খবর শুনলে দ্রুত উপজেলার সকল প্রধান শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ করে সাহায্যের ব্যবস্থা করি, যা চলমান রয়েছে।
উক্ত বিষয় নিয়ে, লোহাগাড়া শিক্ষা অফিস, ফেসবুক পেজে, একটি স্ট্যাটাস শেয়ার করে যা হুবুহু, তুলে ধরা হল।
করোনাকাল চলছে। কে মনে রাখে কার কথা। নিজে বাঁচলেই তো বাপের নাম। ছেলে মাকে অস্বীকার করছে, বাবার লাশ রেখে ছেলে পালাচ্ছে। সেখানে পড়শি কিংবা সমাজের কথা বলে কি লাভ।
এই স্বার্থপরতার দিনে জানতে পারি আমাদের এক সহকর্মী উত্তর পদুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জনাব হোসনে আরাকে দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে শল্যচিকিৎসকের ছুরির নিচে যেতে হয়েছে মাস দুয়েক আগে। চিকিৎসা চালিয়ে নিতে নিয়মিত ব্যয়বহুল ক্যামোথেরাপি নিতে হচ্ছে।
মাস দুয়েক আগে ক্যান্সারের মতো প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হলেও তার খবর জানতে পারি কিছুদিন আগে। তিনি এবং তাঁর মাদ্রাসা শিক্ষক স্বামী হয়তো চেয়েছিলেন কী হবে নিজেদের এসব দুঃখনামা প্রকাশ করে। সন্তান যেখানে নিজেদের পিতামাতার খবর নিচ্ছে না সেখানে এটা তো ভিন্ন গল্প, অন্য প্রেক্ষাপটের অন্যের দুঃখগীতিকা।
হোসনে আরার পরিবার লুকাতে চাইলেও আমরা জেনে গেছি তাঁর অসুস্থতার কথা, ছোট ছোট তিন সন্তান নিয়ে তীব্র আতংক নিয়ে বেঁচে থাকার কথা। একজন দুজন করে জেনে যায় লোহাগাড়ার পুরো প্রাথমিক শিক্ষা পরিবার।
ভালোবাসা ও সহযোগিতার হাত নিয়ে এগিয়ে এসেছে সবাই। এই করোনা ক্রান্তিকালে লোহাগাড়ার প্রাথমিক শিক্ষা পরিবার বুঝিয়ে দিয়েছেন একা নয়, একসাথে বাঁচো। একসাথে থাকলে করোনা ক্যান্সারও সহজে মোকাবিলা করা যাবে।
অসুস্থ শিক্ষককে আজ দেখতে গেলে তিনি বলেন, কেমো নয়; আপনাদের দোয়া, ভালোবাসা ও সাহসই আমার মনোবল বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ।
আমরাও চাই আপনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ফিরে আসুন। আমাদের ভালোবাসা ও দোয়া বিফলে যেতে পারে না।
Leave a Reply