• রবিবার ১২ মে, ২০২৪
logo

চাষিদের আশার আলো দেখাচ্ছে ব্রি ধান-১০৩

নিজস্ব প্রতিবেদক ২৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ৪৯:০২ এএম 5 682 views

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনষ্টিটিউটের সদ্য উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল জাতের ব্রি ধান-১০৩ চাষে আশার আলো দেখছেন ধান চাষিরা। আমন মৌসুমে অন্য জাতের ধান চাষের চেয়ে এ জাতের ধান চাষাবাদে দ্বিগুণ ফলন পাওয়া যায়। টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার চাষিরা এ ধান চাষ করে দ্বিগুণ ফলন পাওয়ায় তাদের মুখে ফুটেছে হাঁসি।
 
তাই এ জাত সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে পাড়লে উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং চাষিরা উপকৃত হবে। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপশি জাতীয় পর্যায়ে খাদ্য নিরাপত্তা চাহিদাও মিটবে।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, ব্রি ধান-১০৩ স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন ধান। গড় আয়ূ ১২৮-১৩৩ দিন। গাছের গড় উচ্চতা ১২৫ সে. মি। কাণ্ড শক্ত, ডিগ পাতা খাড়া, ধানের ছড়া ও ধান লম্বা, চাল সোজা। ১০০০টি পুষ্ট ধানের ওজন প্রায় ২৩.৭ গ্রাম। এ ধানের প্রোটিন এবং অ্যামাইলোজের পরিমাণ ৮.৩% এবং ২৪%। চালের আকার/আকৃতি লম্বা ও চিকন হওয়ায় ধানের দাম বেশি। বিঘা প্রতি ফলন ২৪/২৫ মণ। উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে প্রতি হেক্টরে ৮.০ টন পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়।

আরও জানা গেছে, ভাত ঝরঝরে। ধানে রোগ-বালাই ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ অনেকটা কম। সারও কম লাগে। খেত থেকে ধান কাটার পরপরই ‘রবি শস্য’ করা যায়। এ আগাম জাতের ধান চাষাবাদ করে ২ ফসলি জমিকে ৩ ফসলি ও ৩ ফসলি জমিকে ৪ ফসলে রূপান্তর করতে পারেন চাষিরা। তাই চাষিদের নিকট ব্রি ধান-১০৩ দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে।

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গত বছরের উদ্ভাবিত ব্রি ধান-১০৩ এ উপজেলায় আবাদ হয়েছে ১২০ হেক্টর। এছাড়াও ব্রি ধান-৭৫, ৮৭, ৯০ ও ৯৫ জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। এসব ধানের উপর গত শুক্রবার (০৩ অক্টোবর) ‘খামারি মোবাইল অ্যাপের’ কার্যকারিতা যাচাই-বাচাই ও উচ্চ ফলনশীল আমন ধানের ফসল কর্তন ও কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় ধনবাড়ীর মুশুদ্দি উত্তরপাড়ায়। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ও কৃষিমন্ত্রালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলার মুশুদ্দি গ্রামের কৃষক হারুন মিয়া বিডি নিউজ বুকে বলেন, ‘এবার ৫ বিঘা জমিতে ব্রি ধান-১০৩ আবাদ করেছি। এতে বিঘা প্রতি ২৪/২৫ মণ ফলন পেয়েছি। এলাকার অনান্য চাষিরা এ ধান চাষে আশার আলো দেখছেন।’

কৃষক বদিউজ্জামান, জমির উদ্দিন, সোহরাব আলী ও খন্দকার গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘এ উচ্চ ফলনশীল ধান আবাদে চাষিরা বেশি লাভবান হবে। ধানে রোগ-বালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ নেই বললেই চলে।’

উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘ব্রি ধান-১০৩ এ আধুনিক উফশী ধানের সকল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। আমরা এ জাতের ধান চাষে চাষিদের সঠিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাসুদুর রহমান বিডি নিউজ বুকে বলেন, ‘ব্রি ধান-১০৩ উচ্চ ফলনশীল জাত। এ মৌসুমে যেসব চাষিরা এ ধান আবাদ করেছেন তাঁরা দ্বিগুণ ফলন পেয়েছেন। যদি বীজ সংগ্রহ করে কৃষক পর্যায়ে ছড়িয়ে দেয়া যায় তাহলে চাষিরা লাভবান হবেন।’