• রবিবার ১৬ জুন, ২০২৪
logo

যৌতুকের নির্যাতনে অন্ত:সত্ত্বা গৃহবধূর মৃত্যু

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি ২৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ৪৯:০২ এএম 5 682 views
  • নয়নের চাচা বলেন, ‘এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে ওই রাতে আলোচনা হয়েছে। ওই চেয়ারম্যান মীমাংসা করে দিবেন বলে তিনি জানান। এছাড়া তিনি আর কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।’


    বছর খানিক আগে প্রেমের সম্পর্কে নয়ন মিয়া (২২)’র সঙ্গে বিয়ে হয় শারমিন আক্তার তৃপ্তি'র (২১)। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য নয়ন ও তাঁর পরিবারের লোকজন চাপ দিতে থাকে তৃপ্তিকে। মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয় চার মাসের এই অন্ত:সত্ত্বা গৃহবধূকে। কিন্তু যৌতুকের নির্যাতনে অসহ্য হয়ে ভালোবাসার ঘর বেশি দিন স্থায়ী হল না। 

 

বৃহস্পতিবার (০৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় স্বামীর নির্যাতনের শিকারে তৃপ্তি ঘরের আড়ে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তাঁর পরিবার।

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার বীরতার ইউনিয়নের কাঁঠালিয়া বাড়ি পশ্চিম পাড়া গ্রামে এ ঘটনা। সে ওই গ্রামের আ. ছালাম তুলার মেয়ে। একইদিন রাতে তৃপ্তি বাবার বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করে ধনবাড়ী-থানা পুলিশ।

নয়ন মিয়া পার্শ্ববর্তী জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার আদারভিটা ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামের মো. আলীর ছেলে। সরিষাবাড়ি উপজেলায় একই কলেজে পড়ার সুবাধে তাদের প্রেমের সম্পর্ক।

তৃপ্তির মা সেলিনা বেগম ও নানা সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল খালেক জানান, তৃপ্তি আর নয়ন একই কলেজে দ্ধাদশ শ্রেণিতে পড়ত। সেখান থেকে দু’জনের পরিচয়। বছর খানেক আগে বিয়ে করে তাঁরা। মেনেও নেয়া হয় দুই পরিবারের পক্ষ থেকে। চার মাস আগে অন্ত:সত্ত্বা হয় তৃপ্তি। বিয়ের কিছুদিন যেতে না, যেতেই নয়ন ও তাঁর পরিবার ৫ লাখ টাকা দাবি। ওই টাকা দিয়ে মোটারসাইকেল কিনবে নয়ন। সেজন্য বেশ কয়েকবার নয়ন-কেও টাকা দেয়া হয়। বৃহস্পতিবার আবারো তৃপ্তিকে মোবাইলে টাকার জন্য মানসিকভাবে চাপ দেয় নয়ন। মানসিক চাপে তৃপ্তি ঘরের আড়ে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। আমরা লোভী নয়ন ও তাঁর পরিবারের বিচার চাই।

তৃপ্তির স্বামী নয়নের ব্যবহৃত মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে নয়নের চাচা বিডি নিউজ বুক টোয়োন্টিফোর ডট নেটকে বলেন, ‘এ ঘটনায় বীরতারা ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে ওই রাতে আলোচনা হয়েছে। ওই চেয়ারম্যান মীমাংসা করে দিবেন বলে তিনি জানান। এছাড়া তিনি আর কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।’

বীরতারা ইউপি চেয়ারম্যান আহাম্মেদ আল-ফরিদ বিডি নিউজ বুক টোয়োন্টিফোর ডট নেটকে বলেন, ‘মেয়েটিকে টাকার জন্য স্বামী নয়ন ও তাঁর পরিবার চাপ দিত বলে শুনেছি। রাতেই থানা-পুলিশকে অবহিত করেছি। অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করি বলে জানা এই ইউপি চেয়ারম্যান।’

ধনবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এইচএম জসিম উদ্দিন এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ শুক্রবার লাশ ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’